মহাকাশে যাত্রা শুরু ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপের !




ইতিহাস গড়ল জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এটি বিশ্বের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় মহাকাশ বিষয়ক টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপটি দক্ষিণ আমেরিকার ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে ইউরোপিয়ান আরিয়ান রকেটে চেপে মহাকাশে যাত্রা করেছে।

এই মহাবিশ্বে আলো বিকিরণকারী যেকোনো নিকটবর্তী নক্ষত্র ও ছায়াপথের ছবি ধারণ করার লক্ষ্য নিয়ে মহাকাশে যাত্রা করেছে টেলিস্কোপটি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ তৈরিতে খরচ পড়েছে অন্ততপক্ষে ১০০০ কোটি ডলার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ বছর ধরে এটির নকশা করা হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টার মধ্যে অন্যতম এই টেলিস্কোপ। দূরে অবস্থিত গ্রহগুলোর বায়ুমণ্ডল, আবহাওয়া সম্পর্কেও অনুসন্ধানের সক্ষমতা আছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের।
চাঁদে অবতরণকারী অ্যাপোলো নভোযানের একজন স্থপতির নামে টেলিস্কাপটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি শক্তিশালী হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরী। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও কানাডার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রকৌশলীরা এই টেলিস্কোপ তৈরিতে একযোগে কাজ করেছেন। এটি আগের যেকোনো টেলিস্কোপের চেয়ে শতগুণ শক্তিশালী।

এই টেলিস্কোপে রয়েছে সাড়ে ছয় মিটার প্রশস্ত সোনালী আয়না। এটি হাবল টেলিস্কোপের চেয়ে তিনগুণ প্রশস্ত। এছাড়া বর্ধিত অপটিক্স চারটি অতি-সংবেদনশীল যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মহাকাশের গভীরে দেখতে সক্ষম করে তুলবে।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মূল লক্ষ্যগুলোর একটি হচ্ছে সাড়ে ১৩ বিলয়ন বছর আগের অর্থাৎ, বিগ ব্যাংয়ের পরপরই সৃষ্ট আদি নক্ষত্রের তথ্য অনুসন্ধান করা। এ বস্তুগুলোর মধ্যে পারমাণবিক বিক্রিয়া থেকেই জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রথম ভারী পরমাণু, যেমন- কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস ও সালফার সৃষ্টি হয়।

একে হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সহজে বলার স্বার্থে ‘জেডব্লিউএসটি’ এবং ‘ওয়েব’ নামেও ডাকা হচ্ছে একে। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এর নির্মাণ কাজ করেছেন কয়েক দশক ধরে।

নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএস) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির (সিএসএ) যৌথ প্রকল্প হিসাবে নির্মাণ করা হয়েছে জেডব্লিউএসটি। উৎক্ষেপণের প্রাথমিক পর্যায়ে ইএসএর আরিয়ান ৫ রকেটে গোটানো অবস্থায় থাকবে টেলিস্কোপটি। ফ্রেঞ্চ গিনিতে অবস্থিত ইএসএর ‘ইএলএ-৩’ লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকে যাত্রা শুরু করবে আরিয়ান ৫।

জেডব্লিউএসটির গন্তব্য পৃথিবী থেকে ১০ লাখ মাইল দূরে। মহাকাশের সবচেয়ে পুরোনো আর গোপন তথ্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে টেলিস্কোপটিতে আছে হালের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি। মহাজাগতিক অন্ধকার যুগ পেরিয়ে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া প্রথম আলোর কণার তথ্য সংগ্রহ করবে টেলিস্কোপটি। ধূলিকণার মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা যে গ্রহ-নক্ষত্রগুলো হাবলের নজর এড়িয়ে গেছে, সেগুলো চিহ্নিত করতে পারবে জেডব্লিউএসটি। খালি চোখে ধরা পড়ে না এমন ছায়াপথ আর দানবীয় ব্ল্যাকহোলের গহিনে দেখার সক্ষমতাও আছে টেলিস্কোপটির।

Link: https://www.youtube.com/watch?v=7nT7JGZMbtM












Comments

Popular posts from this blog